মলয় দে নদীয়া :- 1967 সালে আর সি বি আই বামফ্রন্টে যোগ দেওয়ার পর থেকে, শান্তিপুর বিধানসভার আসনটি পেয়ে আসছেন। এবং সেই সুবাদেই বিমলানন্দ মুখার্জি পরপর চারবার, এবং অসীম ঘোষ দুবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এই আসন থেকে। যার মধ্যে বিমানবন্দর বাবু একবার রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন এই বিধানসভা নির্বাচন কেন্দ্র থেকে জয়ী হবার পর। হয়তো মাৎস্যন্যায় ঘটেছিলো, 2001 সালে! বামফ্রন্টের সমবেত সিদ্ধান্তে অসীম ঘোষ শান্তিপুর বিধানসভার প্রার্থী হওয়া সত্বেও সেই সময়কার সিপিআইএম নেতৃত্ব নির্দল প্রার্থী বাদল বসাক কে কুঁড়েঘর চিহ্নে নির্বাচিত করার কর্মকাণ্ড করেছিলেন প্রকাশ্যেই। তার পরবর্তী 2006 সালে এই কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী শান্তনু চক্রবর্তীর নাম এই বিধানসভার পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে, সিপিআইএম। তবে অবশ্য হাওড়ায় একটি আসুন আর সিপিআই কে ছেড়ে দেয় সিপিআইএম। এরপর 2016 সালে, কলকাতা হাইকোর্টের উকিল পৈতৃক সূত্রে শান্তিপুরে ভিটেবাড়ি আছে এমন এক বাম মনোভাবপন্ন সঞ্জয় বাসুকে প্রার্থী করে বামফ্রন্ট। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করেই রাজ্যের যুব কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য কে নিয়ে প্রার্থী হিসেবে পরিচিত করাতে শুরু করে সিপিআইএম। যদিও সিপিআইএমের অক্লান্ত পরিশ্রমে জয়লাভ করে জোটের জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী , কিন্তু পরবর্তীতে তৃণমূলে বর্তমানে বিজেপিতে। সঞ্জয় বসু দলের চাপে আর সি পি আই প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে। এবছর বামফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আইএস এফ ,কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সিট ভাগাভাগি চূড়ান্ত হয়েছে। গতবছরের জেতার নিরিখে এ বছরও কংগ্রেসের প্রার্থী হবে এমন শোরগোল কান পাতলেই শোনা যায়! এই রকম পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগে, প্রদেশ কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক ঋজু ঘোষাল পদার্পণ করে শান্তিপুরে, বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের ব্যক্তিগতভাবে পরিচয়পর্ব এর মধ্যে তিনি সরাসরি না হলেও বুঝিয়ে দেন তিনিই প্রার্থী হচ্ছেন। শান্তিপুর চৌধুরীপাড়ায় তিনি একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ভোট কর্মী পরিচালনার জন্য। গতকাল হঠাৎই কংগ্রেসের ছোট্ট একাংশকে দেখা গেলো সিপিআইএম ছাত্র-যুব সাথে মিলে নতুনহাট অঞ্চল এবং শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরী কাছে বেশ কয়েকটি দেওয়াল লিখতে! তবে প্রতীক চিহ্ন হিসেবে বড় করে কাস্তে হাতুড়ি তারা , এ প্রসঙ্গে অনেকেই ভাবছেন দলের প্রচার করতে প্রতীক আঁকা যেতেই পারে! কিন্তু প্রশ্নটা রয়ে যাচ্ছে ” এই চিহ্নে ভোট দিন” কথাটাও লেখা আছে তাতে। তারমানে সিপিআইএম প্রার্থী সৌমেন মাহাতো হচ্ছেন বলে যে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিলো তা কি সত্যি হতে চলেছে ? স্থানীয় সিপিআইএম দলের পক্ষ থেকে অবশ্য এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি কেউ! জেলা সম্পাদক সুমিত দে জানান এ ধরনের কাজকে সমর্থন করি না আমরা ।সৌমেন মাহাতো অবশ্য জানান “দলের পক্ষ থেকে কে বা কারা দেওয়াল লিখেছে তা খোঁজ নিচ্ছি।” যদিও সমস্ত ভিডিও ফুটেজ এবং ছবিতে ভরে গেছে সোশ্যাল মিডিয়া, দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি মথুরা কর্মকার এবং বেশকিছু বাম ছাত্র যুব নেতৃত্বকে। শহর কংগ্রেস সভাপতি রাজু পাল জানান, তারা কোন নিয়মে দেওয়াল লিখেছেন আমার জানা নেই, তবে পরবর্তীকালে মুছতে হতে পারে। আর সি পি আই দলের পক্ষ থেকে অভিজিৎ চক্রবর্তীর সাফ কথা, জোটের স্বার্থে ছোট-বড় বলে কিছু হয় না প্রত্যেকের সম্মান থাকা উচিত, এবং নিয়মও সকলে ক্ষেত্রে একই প্রযোজ্য হওয়া উচিত! অতীতের সমস্ত আন্দোলনের দলের কর্মকাণ্ড ভুলে গিয়ে বরাবরই আর সিপিআই ব্রাত্য হয়েছে।গত বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আর সি পি আই প্রার্থী সঞ্জয় বাসুর পরিবর্তে, স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব কংগ্রেসের অরিন্দম ভট্টাচার্য কে নিয়ে একাধিক জায়গায় পরিচিতি করিয়েছে জোটপ্রার্থী হিসেবে। অথচ তখনও বামফ্রন্টের সিদ্ধান্ত হয়নি। বহু বামপন্থী মানুষ মুখ দিয়েছে তখন থেকেই, এবারেও একই পরিস্থিতি।