গণধর্ষিতা হয়নি রাজগঞ্জের নাবালিকারা,মেডিক্যাল রিপোর্ট উল্লেখ করে দাবি চাইল্ড রাইট কমিশনের চাইল্ড রাইট কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপোর্টে গণধর্ষণের প্রমান পাওয়া যায়নি। শরীরে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।’’

প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: গণধর্ষিতা হয়নি রাজগঞ্জের দুই নাবালিকা। মেডিক্যাল রিপোর্ট উল্লেখ করে এমনটাই দাবি করলেন চাইল্ড রাইট কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।

রবিবার সকালে জলপাইগুড়িতে আসেন চাইল্ড রাইট কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে মোট তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। শহরে পৌঁছে প্রথমে তাঁরা প্রথম চলে যান জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তাঁরা নাবালিকার সাথে কথা বলে তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। এরপর তাঁরা বেরিয়ে চলে আসেন জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে। সেখানে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

গত শুক্রবার ৪ সেপ্টেম্বর রাজগঞ্জের সন্নাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের নবগ্রাম এলাকার একটি চা বাগানের কর্মীর দুই মেয়ে তাদের কাকার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। বিকেলের পর বাড়ি ফেরার পথে তাদের রাস্তা আটকায় পাশের গ্রামের কিছু যুবক। এরপর তাদের গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। কোনওমতে সেখান থেকে পালিয়ে তারা বাড়ি ফেরে। এরপর লোকলজ্জার ভয়ে রবিবার রাতে দুই বোন একসঙ্গে কীটনাশক খায়।

পরিবারের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে দুই বোনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে তাদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে সোমবার রাতে মারা যায় ১৬ বছর বয়সী বড় বোন। ছোট বোন এখনও হাসপাতালে ভর্তি।

এই ঘটনা জানাজানি হতেই তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ডিএসপি (ক্রাইম) প্রদীপ সরকারের নেতৃত্বে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ঘটনার দিন ঠিক কী কী হয়েছিল বিস্তারিত খোঁজ নেন। এই ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে রাজগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। গনধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

এই ঘটনাই খতিয়ে দেখতে রবিবার জলপাইগুড়িতে আসেন চাইল্ড রাইট কমিশনের সদস্যরা। নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার পর কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল রিপোর্টে গণধর্ষণের প্রমান পাওয়া যায়নি। শরীরে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।’’ ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।