বানারহাটে চা বাগানে পাতা খাঁচায় চিতাবাঘ, গলায় রেডিও কলার

 ব্যুরোজলপাইগুড়ির বানারহাট চা বাগানে পাতা খাঁচায় ধরা পড়ল কলার লাগানো চিতাবাঘ। নিজের পুরনো আস্তানায় ফিরিয়ে দেওয়ার পরেও ফের সেই একই চিতাবাঘ এসে হাজির হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চা বাগান ও তার আশপাশের এলাকায়।

গত বেশ কয়েক দিন ধরে বানারহাট চা বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল একটি চিতাবাঘ বা লেপার্ড। প্রায় রোজই সে চা বাগানের লেবার লাইন থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল হাঁস, মুরগি প্রভৃতি। তার হামলায় বেশ কয়েক জন লোক আহত হয়েছিলেন। চিতাবাঘ ঢুকেছে খবর পেয়ে সম্প্রতি ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতেন বন দফতরের আধিকারিকরা। মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায় সেই খাঁচায় আটকে পড়েছে একটি পুরুষ চিতাবাঘ।

বনকর্মীরা খবর পেয়ে সেই চিতাবাঘ উদ্ধার করতে যান। তখন তাঁরা  দেখতে পান তার গলায় লাগানো রয়েছে একটি রেডিও কলার। অর্থাৎ এই চিতাবাঘটিকে আগেও ধরা হয়েছিল।

এই ঘটনায় জেলার বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী টেলিফোনে বলেন, “বানারহাট চা বাগানে রেডিও কলার লাগানো অবস্থায় একটি লেপার্ড খাঁচায় বন্দী হয়েছে। এই লেপার্ডটিকে আমরা কয়েক মাস আগে এই চা বাগান থেকে উদ্ধার করেছিলাম। তার গলায় রেডিও কলার লাগিয়ে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। রেডিও কলার থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই চিতাবাঘটির রেডিও কলারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এবার তার গলা থেকে কলার খুলে তাকে ফের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।”

উত্তরবঙ্গের চা বাগানে চিতাবাঘের আনাগোনা নতুন নয়। এপ্রিল মাসের শেষ দিকে আলিপুরদুয়ারের তাসাটি চা বাগানে গাড়ির ধাক্কায় একটি চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছিল। চা বাগানের বাসিন্দারা প্রথমে ভেবেছিলেন জ্যান্ত চিতাবাঘ শুয়ে আছে। অনেকক্ষণ সেটিকে একই ভাবে পড়ে থাকতে দেখে তাঁরা বন দফতরে খবর দেন। জানা যায় গাড়ির ধাক্কায় সেটির মৃত্যু হয়েছে। তার আগে ওয়াসাবাড়ি চা বাগানে চিতাবাঘের হামলা থেকে কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচেছিলেন এক ব্যক্তি। এপ্রিল মাসেই বীরপাড়া চা বাগানে ঢুকে পড়েছিল একটি চিতাবাঘ।

ফেব্রুয়ারি মাসে ডুয়ার্সের লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে ধরা পড়েছিল একটি চিতাবাঘ। সেটিকে ধরার জন্য অবশ্য বন দফতরের পক্ষ থেকে ফাঁদ পাতা হয়েছিল। উত্তরবঙ্গে সেনা ছাউনির পরিত্যক্ত একটি গুদাম থেকেও কিছুদিন আগে একটি চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেটি ওই পরিত্যক্ত গুদামের ছাদ দিয়ে ভিতরে লাফিয়ে পড়লেও সেখান থেকে আর বের হতে পারেনি।