সেপ্টেম্বরে তিন দিন রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ তৃণমূলের, কর্মসূচি ঘোষণা পার্থর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১১ অগস্ট এমনই এক বৈঠকে রাজ্যের বকেয়া পাওনার অঙ্ক প্রধানমন্ত্রীকে শোনান মমতা।

প্রতিনিধি :রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে পথে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেপ্টেম্বরের ৮, ১৪ ও ২০ তারিখ রাজ্যের সর্বত্র প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে রাজ্যের শাসক দল। এদিন এই ঘোষণা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মূলত জিএসটি-সহ বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের পাওনা না মেলার অভিযোগ তুলেই এই প্রতিবাদ কর্মসূচি। পার্থ এদিন বলেন, জেলায় জেলায় কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হবে তৃণমূল কংগ্রেস।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১১ অগস্ট এমনই এক বৈঠকে রাজ্যের বকেয়া পাওনার অঙ্ক প্রধানমন্ত্রীকে শোনান মমতা। তার আগে ২৭ জুলাইয়ের বৈঠকেও একই কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ঘূর্ণিঝড় উমফানের ক্ষতিপূরণের জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছিল নবান্ন। কিন্তু নয়াদিল্লি এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে আর দেয়নি। এছাড়াও বিভিন্ন খাত মিলিয়ে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের মোট বকেয়া পাওনা ৫৩ হাজার কোটি টাকা। খোদ প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেন, ভার্চুয়াল বৈঠকে বলেন, “বাংলা এখনও পর্যন্ত জিএসটি বাবদ রাজ্যের যে অংশ তার চার হাজার ১৩৫ টাকা পেয়েছে। এ ছাড়াও কেন্দ্রের কাছে সমস্ত খাত মিলিয়ে বাংলার বকেয়া রয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা।”

শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও জিএসটি বাবদ প্রাপ্য নিয়ে কেন্দ্রের উপরে চাপ তৈরি করছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কোভিড সংকটের মধ্যে রাজ্যগুলিকে জিএসটি-র প্রাপ্য ১৪ শতাংশ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন সনিয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে রাজ্যগুলির প্রতি ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। তাঁর মতে রাজ্যগুলিকে জিএসটি-র প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করলে অতিমহামারীর মধ্যে তাদের ব্যাপক আর্থিক দুর্দশায় ফেলা হবে।

সংসদের অধিবেশনে জিএসটি নিয়ে সরব হতে চান সনিয়া। তিনি বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক নিয়ে বেশ কয়েকটি বিতর্ক আছে। সংসদের অধিবেশন বসছে আর তিন সপ্তাহের মধ্যে। আমি মনে করি, কেন্দ্র-রাজ্যের বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হওয়া দরকার। তাহলে আমরা একসঙ্গে বক্তব্য পেশ করতে পারব।” সনিয়ার সঙ্গে ওই বৈঠকের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রীদের উচিত বিষয়টি নিয়ে যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলা। তাঁকে সমর্থন করে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং বলেন, “চলতি বছরে আমাদের ২৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে। আমরা এখনও পর্যন্ত খরচ করেছি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। আমাদের রাজ্যের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমি মমতাজির সঙ্গে একমত।”

কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুতে জাতীয় রাজনীতিতে চাপ তৈরি হয়েছে। তাতে বড় ভূমিকা নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার একই ইস্যুতে রাজ্যেও সরব হতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এদিন তারই ইঙ্গিত দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।