
প্রতিনিধি দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনের প্রাণকেন্দ্র ক্যানিং শহর। ক্যানিং মহকুমা শাসকের দফতর থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে মাতলা নদী ভরে উঠছে প্লাস্টিক ,থার্মোকল আর বিভিন্ন ময়লা আবর্জনায়। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিদিন মাতলা নদীতে ফেলা হচ্ছে ময়লা আর্বজনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ক্যানিং বাজারের সমস্ত আর্বজনা নদীতে ফেলার ফলে এই মহামারীর সময়ে এলাকায় একদিকে যেমন দূষণ ছড়াচ্ছে, তেমনি দূষিত হচ্ছে মাতলা নদীর জলও। শুধু মানুষ নয়, রোগ ছড়াচ্ছে পশুপাখিদের মধ্যেও। যেখানে ময়লা আর্বজনা ফেলা হচ্ছে সেখান থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ক্যানিং স্পোর্টস কমপ্লেক্স। এখানেই এখন তৈরি হয়েছে কোভিড হাসপাতাল। নদীর দূষণ রোগীদের আরও বিপদের দিকে ঠেলে দেবে নাতো? সেটাই এখন চিন্তা এখানকার মানুষের। এই ভাবে মাতলা নদীতে আর্বজনা ফেলায় রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার মানুষ।
২০০১ সালে সুন্দরবনের গোসাবার সজনেখালিতে একটি হরিণ মারা যায়। সেই সময় হরিণটির দেহ ময়নাতদন্ত হয়। ময়না তদন্তে মৃত হরিণের পেট থেকে পাওয়া গিয়েছিল প্লাস্টিক। তারপর থেকে সুন্দরবনের নদীতে প্লাস্টিক, থার্মোকল ফেলা নিষিদ্ধ করা হয়। কেউ নদীতে প্লাস্টিক থার্মোকল ফেললে জেল জরিমানা উভয়ের বিধান আছে। অথচ আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই প্রকাশ্যে মাতলা নদীতে এই ভাবে ফেলা হচ্ছে প্লাস্টিক থার্মোকল আরও নানা আবর্জনা। জোয়ার এলে জলের স্রোতে আর্বজনা নদীর চরে আটকে গিয়ে ক্ষতি হচ্ছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের। ক্যানিং মহকুমাশাসকের দফতর থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে গড়ে উঠেছে নব নির্মিত পাখিদ্বীপ ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই জঙ্গলও।
দেশের প্রাচীন একটি শহর হলেও ক্যানিংয়ে আজও নেই আর্বজনা ফেলার জন্য স্থায়ী ভ্যাট। স্থানীয় মানুষজন এবং ক্যানিং বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার ক্যানিং। অথচ এখনও আবর্জনা ফেলার সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই। যেখানে সেখানে আর্বজনা পড়ে থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলে জল জমে যায়। ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। এতে নদীদূষণ যেমন হচ্ছে তেমনি হচ্ছে পরিবেশ দূষণও।