জিএসটি-র বকেয়া মিটিয়ে দেব, রাজ্যগুলিকে চিঠি দিল মোদী সরকার

চলতি বছরে করোনা অতিমহামারীর জন্য জিএসটি সেস আদায় হয়েছে যথেষ্ট কম। তা সত্ত্বেও পণ্য ও পরিষেবা কর বাবদ রাজ্যগুলির যা প্রাপ্য, আমরা তা মিটিয়ে দেব। রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে এমনই জানাল মোদী সরকার। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন করোনা অতিমহামারীকে বলেছেন ‘অ্যাক্ট অব গড’। অর্থাৎ ঈশ্বরের মার। রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, অতিমহামারীর ফলে কেন্দ্রের রাজস্ব আদায় হয়েছে খুবই কম। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় স্তরে নতুন করে ঋণ না নেওয়াই ভাল। বরং রাজ্যগুলি ঋণ নিক।

কিছুদিন আগে শোনা গিয়েছিল, জিএসটি বাবদ রাজ্যগুলির যা প্রাপ্য তা এবার কেন্দ্রীয় সরকার দিতে পারবে না। এদিকে রাজ্যগুলি এবার লকডাউনের মধ্যে তেমন রাজস্ব আদায় করতে পারেনি। পাঞ্জাব সরকার জানিয়েছে, এবছর তার রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে ২৫ হাজার কোটি টাকা। হরিয়ানা বলেছে, ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হওয়ার আগে তাদের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল দেশে সবচেয়ে বেশি। এখন তা ব্যাপক হারে কমে গিয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে জিএসটি-র চেয়ে কেন্দ্রীয় রাজস্ব আদায় করা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। বেতনের ওপর প্রত্যক্ষ করা বসানো হয়ে উঠেছে মুশকিল। আমদানি কমেছে। তার ফলে কমেছে শুল্ক। কেবল অতিমহামারী নয়, দেশের নিরাপত্তার জন্যও খরচ হচ্ছে বিপুল।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলিকে দু’টি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। রাজস্ব সচিব জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যগুলিকে কম সুদে ৯৭ হাজার কোটি টাকা ধার দেওয়া হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সেই ঋণ শোধ করতে হবে। সেস বসিয়ে ঋণশোধের অর্থ সংগ্রহ করবে রাজ্যগুলি। অথবা রাজ্যগুলি পুরো ২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকাই ঋণ নিতে পারবে। কোন রাজ্য কত টাকা ঋণ নেবে, তা জানাতে হবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে।

অর্থমন্ত্রী জানান, জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ বাবদ কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালে দিয়েছে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে গত মার্চে দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা। জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সেস আদায় হয়েছে মাত্র ৯৫ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।

গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি দাবি জানাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ক্ষতিপূরণ দিক। কারণ তাদের রাজস্ব আদায় ব্যাপক কমেছে। বুধবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় এড়িয়ে যেতে চাইছে, তা রাজ্যগুলির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।