
এতরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও নোট জাল বন্ধ করতে পারছে না সরকার। বরং ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ২০০ টাকার আর ৫০০ টাকার জাল নোটে ভরে গেছে দেশের বাজার।
আজ, মঙ্গলবার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বাৎসরিক পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। তাতে স্পষ্ট দেখা গেছে যে সর্বোচ্চ মূল্যসংখ্যার নোট হিসাবে ২০০০ টাকার নোটের প্রচলন গত দুবছরে ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কোনো শাখাতেই আর নতুন করে আর একটাও ২০০০ টাকার নোট ছাপানো হয়নি।
২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে নরেন্দ্র মোদী সরকার আচমকা ঘোষণা করে তখনকার প্রচলিত ৫০০ এবং এক হাজার টাকার নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। নোটবন্দির সিদ্ধান্তের পরে, সরকার ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটের নতুন সিরিজের পাশাপাশি 200 টাকার নোটও চালু করেছিল। সে সময় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল টাকা জাল করার সমস্ত পথ বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই হঠাৎ করে এরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এর ফলে জাল নোটের সমস্যা কমে যাওয়ার বদলে ক্রমশ আরও বেড়ে গেছে। সেই চাঞ্চল্যকর তথ্যই একরকম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এর নতুন প্রতিবেদন।
পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে ২০১৮-১৯ সালে জাল ৫০০টাকার নোটের সিরিজ ধরা পড়েছিল ২১৮৬৫ খানা৷ আর ২০১৯-২০ সালে সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৩০,০৫৪ তে। অর্থাৎ ৫০০টাকার জাল নোটের সংখ্যা এক বছরে ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
একইরকমভাবে, জাল ২০০ টাকার নোটের সনাক্তকরণ গত একবছরে ১৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে আরবিআই এবং ব্যাঙ্কগুলি একসঙ্গে ২০১৮-১৯ সালে ২০০ টাকার ১২৭২৮টি জাল নোট সনাক্ত করেছিল, যা ২০১৯-২০ তে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১,৯৬৯ এ।
বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া এই পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাঙ্কের হাতে যে নকল নোট এসেছে বা পুলিশি ধরপাকড়ে যে টুকু ধরা পড়েছে তার ভিত্তিতেই এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। হতেই পারে বাস্তবে বাজারে নকল নোটের সংখ্যা এর কয়েক গুণ।
পাশাপাশি ২০০০ টাকার নকল নোটের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরবিআইয়ের তথ্য আরও দেখায় যে, ২ হাজার টাকার নোটের সার্কুলেশন গত দুবছরে চোখে পড়ার মতো কমেছে। পাশাপাশি ৫০০, ২০০ ও ১০০ টাকার মতো ছোটো নোটের সরবরাহ বেড়েছে বেশ কয়েকগুণ।
গত বছর থেকেই ভারতসরকার ২০০০ টাকার নোট ছাপানো এবং তার প্রচলন ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মনে করা হচ্ছে উচ্চমূল্যের নোটের পরিবর্তে এখন ছোটো নোটের ব্যবহারকেই উৎসাহিত করা হবে।