
ব্যুরো: সেনাবাহিনীতে স্থায়ী কমিশনে যাওয়ার জন্য যোগ্যতার সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করেছিলেন কয়েকজন মহিলা অফিসার। সেই আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। নিজেদের রায়ে তারা জানিয়েছে, সবার ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়াতে গেলে তার গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে অনেক সমস্যা হতে পারে। বিচারপতিদের প্রশ্ন, তাঁরা মনে করেন সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সাহায্য করা উচিত। কিন্তু কোথায় তার সীমারেখা টানা উচিত।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে সেনাবাহিনীতে মহিলাদের অধিকারের দাবিতে এক ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয় দেয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যেভাবে পুরুষরা কম্যান্ড পজিশনে থাকেন, সেভাবেই মহিলাদেরও স্থায়ীভাবে সেখানে নিয়োগ করা যাবে। অর্থাৎ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যেসব মহিলা অফিসাররা ১৪ বছর কাজ করেছেন, তাঁদের ১০টি স্থায়ী কমিশনের পদের জন্য বিবেচনা করা যাবে। তার মানে তাঁরা সেনাবাহিনীতে কর্নেল বা তারও উঁচু পদের জন্য বিবেচিত হবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের চুক্তি খারিজ করে এই রায় শোনায় দেশের শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ে আরও বলা হয়, যেসব মহিলা অফিসার ১৪ বছর অথবা তার বেশি সেনাবাহিনীর শর্ট সার্ভিস কমিশনে কাজ করেছেন, অথচ স্থায়ী কমিশনে যেতে পারেননি, তাঁরা ২০ বছর কাজ করতে পারবেন।
এই বিচারকে সামনে রেখে দেশের শীর্ষ আদালতে কয়েকজন মহিলা অফিসার আবেদন করেন, এই যোগ্যতার সময়সীমা বাড়ানো হোক। কারণ, তাঁদের প্রত্যেকের কর্মজীবনই ১৪ বছরের থেকে এক মাস কম। অর্থাৎ মাত্র এক মাসের জন্য তাঁরা যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। তাই ২০ বছরের কাজে তাঁদেরও অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন তাঁরা।
অন্যদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী কর্লেন বালাসুব্রহ্মন্যম বলেন, “১৬ জুলাই স্থায়ী কমিশনের সিদ্ধান্ত পাশের দিন বলা হয়েছিল, যাঁরা রায়ের দিন অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৪ বছর কাজ করেছেন, তাঁরাই এই সুবিধা পাবেন। সেই সিদ্ধান্তের বদল হলে সমস্যা হবে। কারণ, প্রতি ছ’মাস অন্তর একটি করে ব্যাচ কমিশনড হয়। এভাবে সুবিধা দেওয়া সরকারের পক্ষে মুশকিল।”
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, রায়ের দিন পর্যন্ত যাঁরা ১৪ বছর কাজ করেছেন তাঁরাই সব সুবিধা পাবেন। সেই সিদ্ধান্ত বদলাতে হলে সব ব্যাচের জন্যই তা বদলাতে হবে।”
বেঞ্চের আর এক বিচারপতি কেএম জোসেফ বলেন, “এর ফলে প্রতিটি ব্যাচে যাঁরা ১৪ বছরে কাজ শেষ করবেন, তাঁদের উপরেও প্রভাব পড়বে।”
বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও জানান, তিনি জানেন এই অফিসাররা দেশের জন্যই কাজ করেন। তাঁদের সবাইকে সাহায্য করতেও চান তিনি। কিন্তু কতদূর পর্যন্ত তা করা যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রশ্ন করেন তিনি। বলেন, “আমরা সবাই মনে করি মহিলাদের জন্য কিছু করা উচিত। কিন্তু কোথায় সীমারেখা টানা উচিত?”