সংসদে অধিবেশনে চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে বিবৃতি, ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে কেন্দ্র

ব্যুরোঃ গত কয়েক মাস ধরে ভারতের সঙ্গে চিনের সংঘাত চলছে সীমান্তে। মাঝেমধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে চিন। বেশি আগ্রাসন দেখাচ্ছে লাল ফৌজ। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে সেনার উচ্চপর্যায়ের ও কূটনৈতিক স্তরের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এই অবস্থায় বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জবাব চেয়েছে বিরোধী দলগুলি। আগামীকাল সংসদের বাদল অধিবেশনের শুরুতে এই বিষয়ে বিবৃতি দিতে পারে কেন্দ্র।

রবিবার সংসদের বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। আগামী কাল অধিবেশনের শুরুতে এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। আগামী কাল বাদল অধিবেশনের শুরুতেই হয়তো এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করবে কেন্দ্র।

গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার উপর চিনা সেনার আচমকা হামলায় ২০ জন জওয়ান শহিদ হন। অন্যদিকে ভারতের প্রত্যাঘাতে চিনের অন্তত ৩৫ জন জওয়ান নিহত হয় বলে খবর। এই ঘটনার পর থেকেই ক্রমাগত সুর চড়াচ্ছে বিরোধী দল কংগ্রেস। বিশেষ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রায় প্রতিদিনই মোদী সরকারকে আক্রমণ করছেন।

জুন মাসের পর থেকে ক্রমাগত ভারত ও চিন দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। কখনও সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের, কখনও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে। আবার দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে বিদেশমন্ত্রীরাও বৈঠকে বসেছেন। সম্প্রতি রাশিয়ার মস্কোতে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেংগের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকেও বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে।

এত বৈঠকের পরেও সীমান্তে উত্তেজনা কমেনি। নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ চিন। তাদের দাবি সীমান্তে উত্তেজনার জন্য দায়ী ভারত। অন্যদিকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লিও। কোনও মতেই চিনের চাপের কাছে যে নতিস্বীকার ভারত করবে না তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

মাঝে লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিন সেনা সরিয়ে নিলেও ফের সেনা মোতায়েন বাড়ছে। তৈরি রয়েছে ভারতও। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকবার আগ্রাসন দেখিয়েছে চিন। কিন্তু বারবার তাদের পিছু হটতে হয়েছে। লাদাখে লাল ফৌজের বিরুদ্ধে অন্য রকমের নীতি নিয়েছে ভারত। অনেক বেশি আগ্রাসী নয়াদিল্লি।

এই পরিস্থিতিতে চিনের সমস্যা নিয়ে চুপ থাকা কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে খুব সমস্যার। কারণ অধিবেশন শুরু হলেই বিরোধীরা এই ইস্যু নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে সরকারের বিরুদ্ধে। তাই আগে থেকেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছে কেন্দ্র। আর সেই কারণেই হয়তো অধিবেশনের শুরুতে এই বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া হবে কেন্দ্রের তরফে।