মোর্চা নেতাদের আড়ালে থাকার সুযোগে সংগঠন বাড়াচ্ছে বিজেপি, রোশন গিরির তোপে পাহাড়ে আলোড়ন

 দার্জিলিং: বিজেপিকে বিঁধে গুরুংপন্থী মোর্চার দেওয়া প্রেস বিবৃতি ঘিরে তুমুল আলোড়ন পাহাড়ে। পাহাড় ও ডুয়ার্সে সংগঠন বিস্তারে উদ্যোগী হওয়াতেই মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির তোপের মুখে পড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। নাম করে কটাক্ষ করা হয়েছে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তকেও।

শুক্রবার এক প্রেস বিবৃতিতে রোশন জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৯- টানা দশ বছর বিজেপি সাংসদদের জিতিয়ে এনেছেন বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বাধীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। যশবন্ত সিংহ বা সুরিন্দর সিংহ আলুওয়ালিয়া দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ থাকার সময় পাহাড়ে সংগঠন বিস্তারের কোনও চেষ্টা করেনি বিজেপি। কিন্তু সম্প্রতি পাহাড় ও ডুয়ার্সে সেই চেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি। রোশনের অভিযোগ, এমন একটা সময় যখন মোর্চা নেতারা আড়ালে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তখনই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে বিজেপি। বিজেপি তাদের দলের হয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের কথা ঘোষণা করেছে। দার্জিলিংয়ের সাংসদ সেই কর্মসূচিকে উৎসাহের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বলেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন রোশন। রোশনের পরামর্শ, সদস্য বৃদ্ধি না করে বিজেপি গোর্খাদের জন্য ১১ জনজাতির স্বীকৃতি, পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা পালন করুক।

রোশনের এই প্রেস বিবৃতির পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পাহাড় জুড়ে। কিছুদিন আগে বিজেপির আরও এক জোট সঙ্গী জিএনএলএফও বিজেপির কর্মপদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল। একে একে দুই জোট সঙ্গীই বেসুরো বাজতে শুরু করায় পাহাড় নিয়ে বিজেপি যথেষ্টই চাপে পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এখনই এনিয়ে বিজেপি কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে দলে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরেই যা বলার বলা হবে।

২০১৭ সালের অগস্ট মাস থেকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পাহাড়ের পরিস্থিতি। টানা বনধ, বিক্ষোভ, মিছিল, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তেতে ওঠে পাহাড়। পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায় জনজীবন। এই অশান্তির পরিবেশেই গা ঢাকা দেন তখনকার মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুঙ ও রোশন গিরি। ওই বছরেরই ১৩ অক্টোবর বিমলকে ধরতে গিয়ে গুলিতে মৃত্যু হয় রাজ্য পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিকের। এরপরেই লুক আউট নোটিস জারি হয় বিমলের বিরুদ্ধে। তখন থেকেই পাহাড়ছাড়া তিনি। পাহাড়ছাড়া রোশন গিরিও।