মহালয়ায় ফের ভোগ বিলি শুরু হল বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে, তবে বন্ধ রইল মন্দিরে বসে ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা এত বছরের ইতিহাসে এই ঐতিহ্যশালী মন্দিরের ভোগ রান্না বা বিতরণ কোন দিনই বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়নি মন্দিরের দরজাও। কিন্তু মারণ ভাইরাস করোনার আতঙ্কে ভোগ ঘরের রান্না বন্ধ হয় সর্বমঙ্গলা মন্দিরে।

ৰেঙ্গলওয়াজ ব্যুরো  , পূর্ব বর্ধমান: বৃহস্পতিবার থেকে ভোগ বিলি চালু হল বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ ছিল ভোগ বিতরণ। মহালয়া থেকে এই ব্যবস্থা চালু হল ফের। তবে ঠিক হয়েছে আপাতত প্রতিদিন একশো মালসা ভোগ বিলি করা হবে। মন্দিরে বসে ভোগ খাওয়া বন্ধ থাকবে আগের মতোই।

সকালের আলো ফুটতেই ভক্তদের ভিড় বাড়ত। এটাই ছিল সর্বমঙ্গলা মন্দিরের রোজকার চেনা ছবি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ছবিটা পুরো বদলে গেছিল। মন্দিরের মেন গেট সহ তিনটে গেটেই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। গত ১৮ মার্চ থেকে অর্নিদিষ্ট কালের জন্য সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভোগ বিতরণ, ভোগ খাওয়া ও ভোগ রান্না বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সর্বমঙ্গলা ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ থেকে মন্দিরে ভোগ রান্না বন্ধ রাখার নির্দেশিকা মন্দিরের গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর ১৫ জুন সর্বমঙ্গলা মন্দিরের দরজা খুলে ছিল। মন্দির খুললেও সময়সূচি বদল করা হয়। দর্শনের সময় নির্দিষ্ট করা হয় সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা ও বিকেল ৪টে থেকে সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। মন্দিরে প্রবেশের জন্য কিছু নিয়ম মানতে হয় ভক্তদের। ঠিক হয় প্রতিবার দশজন করে ভক্ত প্রবেশ করতে পারবেন একসঙ্গে। কিন্তু ভোগ বিতরণ বন্ধ রাখা হয়।

দামোদর নদের ধারে বাহির সর্বমঙ্গলা অঞ্চলে বসবাস করা চুনুরীদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্টিপাথরে অষ্টাদশভুজা এই দেবী মূর্তি বর্ধমান শহরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। ১৭৪০ সালে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ সর্বমঙ্গলা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির নির্মাণ করেন মহতাব চাঁদ। এত বছরের ইতিহাসে এই ঐতিহ্যশালী মন্দিরের ভোগ রান্না বা বিতরণ কোন দিনই বন্ধ হয়নি। বন্ধ হয়নি মন্দিরের দরজাও। কিন্তু মারণ ভাইরাস করোনার আতঙ্কে ভোগ ঘরের রান্না বন্ধ হয় সর্বমঙ্গলা মন্দিরে।

পরবর্তীতে দরজা খুললেও ভোগ রান্না বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার মহালয়ার দিন থেকে ফের ভোগ রান্না শুরু হল। তবে ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘ভোগ রান্না হলেও কিন্তু এখন শুধুমাত্র ভক্তদের সেই ভোগ বিতরণ করা হবে। প্রতিদিন একশো মালসা ভোগ রান্না হবে। মন্দির চত্বরে বসে ভোগ খাওয়া বন্ধ থাকবে আগের মতোই।’’