
তাঁর মেজাজ যে কখন রৌদ্রজ্বল আর কখন মেঘলা—সে কথা তাঁর ঘনিষ্ঠরাও ঠাওর করতে পারেন না। তাঁর আঁকা ‘মমতার ছবি’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্রুপ হওয়ার পর ফের একবার মেজাজ হারালেন গায়ক তথা যাদবপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কবীর সুমন।
ফোনের অ্যাপে সোমবার একটি ছবি এঁকেছিলেন সুমন। তার ক্যাপশনে লিখেছিলেন ‘ফোনে আঁকলাম তোমায়-মমতা!’ ব্যস তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় ফেসবুকে ‘হা হা’ রিয়্যাক্টের বন্যা। সুমনের আঁকা ছবি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের ওয়ালে ওয়ালে। মঙ্গলবার তাই নিয়েই নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন সুমন।
কেন তাঁর আঁকা ছবিতে হাসির ইমোজি দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে ‘অশ্রাব্য’ ভাষায় পোস্ট করেন সুমন। যদিও এই পোস্টের কমেন্ট অপশন ব্লক করে রাখেন তিনি। যাতে তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে কেউ আর কোনও বিরূপ মন্তব্য না করতে পারেন। তবে এই পোস্টেও হা-হা রিয়্যাক্টে ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনদের অনেকে।
কিন্তু কোন মমতার ছবি সুমন এঁকেছেন তা অবশ্য তিনি স্পষ্ট করেননি। তবে অনেকেই ধরে নিয়েছেন, যেহেতু এক সময় তিনি তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন এবং তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অনেকদিনের তাই এক্ষেত্রে অন্য কিছু হওয়ার অবকাশ নেই। তবে সবটাই ধারণা।
এমনিতে সাংসদ থাকার সময়ে কালীঘাটের সঙ্গে সুমনের বিশেষ বনিবনা ছিল না। ২০০৯-এ ভোটে জেতার অল্প কিছু দিনের মধ্যে থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সুমনের। যাদবপুর কেন্দ্রে তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছিলেন সাংসদ থাকার সময়ে। প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, “তৃণমূল মানে খাও, খাও খাও…!”
২০১৪-র ভোটে তাঁকে আর টিকিট দেননি দিদি। তাঁর বদলে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন নেতাজির পরিবারের সদস্য তথা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসু। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ফের সুমন-তৃণমূল কাছাকাছি আসতে শুরু করেন। বছর চারেক আগে একবার একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ মঞ্চে দাঁড়িয়ে সুমন বলেছিলেন, “আজ থেকে ৩০০ বছর পরে মমতার নামে মন্দির হবে।” সেই সুমন এবার ছবি এঁকেছেন মমতার। আর তা নিয়ে বিদ্রুপে ধরে রাখতে পারলেন না মেজাজ।