ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।

টেক সাপোর্টের নাম করে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা। গ্রেফতার ১৪জন মহিলা সহ ২৭। ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস করলো বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের এরগো টাওয়ারের ১৮ তলায় কিছুদিন ধরেই একটি ভুয়ো কল সেন্টার চালাচ্ছিল বলে পুলিশের কাছে খবর আসে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কম্পিউটারে সুপ্রিমো নামের একটি সফটওয়্যার দিয়ে একসেস নিত এই প্রতারকরা। এরপরই সেই ভুয়ো কল সেন্টার থেকে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহার করে অভিযুক্তরা ফোন করতো জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের। সেখানে তাদের মাইক্রোসফট সংস্থার কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্যে আবেদন জানতো। এই আবেদনে সাড়া দিলে তাদের জানানো হতো টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিতে গেলে তাদের ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন নামের একটি অনলাইন মানি ট্রান্সফার অ্যাপের ওয়ালেটে রিচার্জ করতে হবে। সেই ওয়ালেটে বিদেশি নাগরিকরা নিজেদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের নম্বর দিয়ে রিচার্জ করলে সেই তথ্য এসে পৌঁছত প্রতারকদের হাতে। এরপরই সেই তথ্য ব্যবহার করে বিদেশি অ্যাপের থেকে বিদেশি নাগরিকদের টাকা ট্রান্সফার করা হত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংক একাউন্টে। এরপরই সেই টাকা অভিযুক্তরা সুইফ্ট ট্রান্সফার নামের একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাউন্ট থেকে নিয়ে আসত ভারতীয় ব্যাংক একাউন্টে। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল রাতে সেক্টর ফাইভের ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। সেখান থেকে ১৪ জন মহিলা সহ মোট ২৭ জনকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৫৬টি কম্পিউটার, ১০টি হার্ড ডিস্ক, ১টি ল্যাপটপ, ২৪টি স্মার্ট ফোন, ২টি রাউটার, ২টি ভুয়ো সার্টিফিকেট, ২টি অ্যাটেনডেন্স রেজিষ্টার, ১০ পেজের স্ক্রিপ্ট এবং কাস্টমার ডেটা, ২টি শিল এবং রাবার স্ট্যাম্প, ৭টি ডেবিট কার্ড, ২টি চেক বই এবং ৪৫ পেজের নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। এদের মধ্যে থেকে অভিষেক বিশ্বাস, পলাশ সরকার, মহম্মদ আলাফ হুসেন, মহম্মদ আসিফ আখতার এবং টিংকু বাগছিকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। এই চক্রের মূল পান্ডার খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।