প্রতিনিধি : কোভিডের কারণে রাজস্ব আদায় তলানিতে ঠেকেছে। সরকার যে অর্থসংকটে রয়েছে তা বারবারই জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই তিনি জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণের টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখেছেন। কিন্তু এর মধ্যেও কচুয়া ও চাকলায় লোকনাথ বাবার আশ্রম সংস্কারের জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকার টেন্ডার ঘোষণা করল পূর্ত দফতর।
পূর্ত দফতরের বারাসাত ডিভিশনের ওই টেন্ডারে বলা হয়েছে, কচুয়া ও চাকলায় ট্যুরিজম সার্কিটের উন্নয়নের জন্য দরপত্র হাঁকা হচ্ছে। পুজোর ডালা বিক্রির জন্য একটা আর্কেড নির্মাণ, পুকুর পারের সংস্কার, পুলিশ বুথ, মন্দিরের সৌন্দর্যায়ণ, টয়লেট ব্লক ও গেটওয়ে নির্মাণের জন্য ৮ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকার দরপত্রের ডাকা হয়েছে। এ ছাড়া গেস্ট হাউজ সংস্কার ইত্যাদি কাজের জন্য আরও ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা মূল্যে দ্বিতীয় দরপত্রটি ডাকা হয়েছে।
সরকারের এই দরপত্র নিয়ে বুধবার থেকে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, কোভিডের কারণে এখন পর্যটন বন্ধ রয়েছে। মন্দির, মসজিদ খোলা থাকলেও দর্শনার্থীর চাপ নেই। এটা ঠিক যে এই সময় সংস্কারের কাজের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু একই সঙ্গে এও ঠিক যে কোভিড ও উমফানের পর সরকারের অর্থ বরাদ্দে অগ্রাধিকার এখন বদলে যাওয়ার কথা। কেননা সমাজের বড় অংশের মানুষ এখন তীব্র অনটনে রয়েছে। তাদের সামাজিক সুরক্ষার দায়িত্ব নবান্নেরই। কিন্তু তার পরিবর্তে নবান্ন যে ভাবে মন্দির সংস্কারে নেমেছে তা নিয়েই কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
কদিন আগে অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ভূমিপুজো হয়েছে। তখন মন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গে শাসক দলের অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। কোভিডের সময়ে মন্দির নির্মাণ করার কতটা যৌক্তিকতা রয়েছে তা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন। এখন উল্টো প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার।
এ ব্যাপারে বিজেপির এক মুখপাত্র বুধবার বলেন, “লোকসভা ভোটে মতুয়া সমাজ মুখ ঘুরিয়েছে তৃণমূলের থেকে। শাসক লুব্ধ করতে চাইলেও ফাঁদে পা দিতে চায়নি। বরং উত্তর চব্বিশ পরগনা ও নদিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। হতে পারে সেই কারণেই প্যানিক করছে সরকার”।