বৌদির সঙ্গে সম্পর্ক! তপসিয়ায় যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার পরিবারের ৩

Black woman in handcuffs

 ব্যুরো: গত মঙ্গলবার তপসিয়ায় নিজের ঘর থেকেই উদ্ধার হয় অভিজিৎ রজক নামের এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ। এই ঘটনার তদন্ত করতে নেমে রবিবার অভিজিতের বৌদি, কাকা ও দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তপসিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গিয়েছে, অভিজিতের মৃত্যুতে এই তিনজন যুক্ত। তদন্তের মুখ ঘোরাতেই সাইকেল চুরির গল্প ফেঁদেছিলেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে বৌদির সঙ্গে অভিজিতের সম্পর্কের কথা সামনে এসেছে। ধৃত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

এর আগে অভিজিতের পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, গত মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ একটা আওয়াজে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে বেরিয়ে তাঁরা দেখেন বাড়ির সদর দরজা হাট করে খোলা। তালা ভাঙা। দরজার ভিতরে রাখা দুটি সাইকেলও উধাও। দরজার কাছেই ছিল অভিজিতের ঘর। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে অভিজিতের দেহ। গোটা ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এরপরেই খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তপসিয়া থানার পুলিশ। অভিজিতের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পুলিশের কাছে অভিজিতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, রাতে তাঁদের বাড়িতে সাইকেল চুরি করতে চোর ঢুকেছিল। সেই সময় হয়তো অভিজিৎ জেগে ছিলেন। তিনি চুরিতে বাধা দেওয়ায় তাঁকে খুন হতে হয়েছে। এরপরেই তদন্তে নামে লালবাজারের হোমিসাইড শাখাও।

এরপরেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ভোরে নয় বরং তার আগেই অভিজিৎ খুন হয়েছিলেন। তারপরেই তদন্তের মোড় ঘোরে। পুলিশের সন্দেহ হয় তাহলে কি এর সঙ্গে পরিবারের কেউ বা কারা জড়িত। নইলে পাশের ঘরে একটা খুন হল, সারারাত মৃতদেহ পড়ে থাকল, অথচ কেউ টের পেলেন না। এরপরেই পুলিশের জেরার মুখে পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা যায়।

শেষ পর্যন্ত অভিজিতের কাকা, দাদা ও বৌদিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুটি তত্ত্ব সামনে উঠে আসছে। এক, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। দুই, বৌদির সঙ্গে অভিজিতের পরকীয়া সম্পর্ক। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্পত্তির বিবাদের চেয়েও পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি বেশি জোরালো বলে মনে হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে অভিজিতকে। তারপরে একটা চুরির গল্প ফাঁদা হয়েছে। কিন্তু অপরাধীরা শেষরক্ষা করতে পারেননি।

ধৃত তিনজনকে জেরা করছে লালাবাজারের হোমিসাইড শাখার পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।