
ব্যুরো: বিহারের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাচার হওয়া ১৪ জন বাচ্চাকে উদ্ধার করেছে দিল্লির রেল পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া বাচ্চাদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। আপাতত কোভিড গাইডলাইন মেনে তাদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে তাদের। দক্ষিণ দিল্লির লাজপত নগরের একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছে তিনি।
দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকর জানিয়েছেন, তাদের কাছে আগেই খবর ছিল দিল্লিতে পাচার করে আনা হচ্ছে এই বাচ্চাদের। ওই পুলিশকর্তা জানিয়েছেন গত ৭ সেপ্টেম্বর একটি এনজিও-র তরফে দিল্লি পুলিশকে জানানো হয় যে বিহারের বিভিন্ন জেলা থেকে পাচার হওয়া ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১৪ জন বাচ্চাকে মহানন্দা এক্সপ্রেসে করে আনা হচ্ছে। খবর পেয়ে সতর্ক হয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। ওই এনজিও, দিল্লি পুলিশ এবং দিল্লির রেল পুলিশের তরফে যৌথ অভিযান চালানো হয় পুরনো দিল্লি রেল স্টেশনে। জানা গিয়েছে, এই অভিযানে সামিল ছিল ‘বচপন বাচাও আন্দোলন’ এবং ‘সালাম বালক ট্রাস্ট’ এই দুই সংগঠন।
মহানন্দা এক্সপ্রেসে আসা সমস্ত যাত্রীর গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা হয়েছিল। যাতে বেগতিক কিছু দেখলেই তৎপর হতে পারে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরায় সব যাত্রীর গতিবিধি নজর রাখার সময় সজাগ পুলিশ আর এনজিও কর্মীদের নজর এড়িয়ে পালাতে পারেনি বাচ্চা পাচারকারী দলের পাণ্ডারা। দিল্লির রেল পুলিশের ডেপুটি কমিশনাল হরেন্দ্র কে সিং জানিয়েছেন, মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে থাকা ১৪ জন বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়েছে। সব বাচ্চাদের এর মধ্যেই স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করানো হয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া বাচ্চাদের সঙ্গে শিশু কল্যাণ দফতরের কর্তাদের কথা বলানো হয়েছে। বাচ্চাদের বয়ানের ভিত্তিতে রুজু হয়েছে মামলা এবং ওই ১০ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শিশু কল্যাণ দফতরের সঙ্গে কথা বলার সময়েই ওই বাচ্চারা জানায় যে তারা সকলেই বিহারের বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়া ১৪ জনের মধ্যে ৯ জনের বাড়ি বিহারের কাটিহার জেলায়। দু’জনের বাড়ি বেগুসরাই, দু’জন কৃষ্ণগঞ্জ এবং আর একজন পূর্ণিয়ার বাসিন্দা। পাচারকারীদের উদ্দেশ্য ছিল রাজধানী শহরে এনে বিভিন্ন জায়গায় এদের ছড়িয়ে দেওয়া। অন্য রাজ্যে পাচারের পরিকল্পনাও ছিল। চারজনকে আজাদপুর, দু’জনকে সীলমপুর, দু’জনকে হরিয়ানার ফরিদাবাদ আর বাকি ৬ জনকে পঞ্জাবে পাচারের পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের।