
ব্যুরো: বাংলাদেশ থেকে নদীপথে পণ্য পরিবহণ শুরু হয়ে গেল ত্রিপুরায়। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে একটি সিমেন্ট বোঝাই জলযান রওনা হয়েছে ত্রিপুরার উদ্দেশে। গোমতী নদী বেয়ে ৯৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর তা সোনামুড়ায় এসে পৌঁছবে।
এদিন বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোনামুড়ায় ওই জলযানকে স্বাগত জানাবেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং বাংলাদেশে স্থিত ভারতীয় হাই কমিশনার রেবা দাস গঙ্গোপাধ্যায়।
বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম কোনও পণ্য নদীপথে আনা হচ্ছে ত্রিপুরায়। সেদিক থেকে এ ঘটনা ঐতিহাসিক বটে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও নতুন মাইলফলক তৈরি হল। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম জলযানটি রওনা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, এই নতুন জলপথে পুরোদস্তুর পণ্য পরিবহণ শুরু হয়ে গেলে সামগ্রিক ভাবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আরও প্রসার ঘটবে। এ ভাবে পণ্য পরিবহণে খরচ কম, তা পরিবেশ সহায়ক। তা ছাড়া এই জলপথ-বাণিজ্য দুই দেশেরই স্থানীয় অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে নদীপথে পণ্য পরিবহণের বিষয়ে কয়েকদিন আগেই বিবৃতি দিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি জানিয়েছিলেন, “কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ত্রিপুরার সোনামুড়া পর্যন্ত গোমতী নদী দিয়ে পণ্য আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিয়েছে। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।”।
আবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণের ট্রাফিক এন্ড প্রোটোকল ডিরেক্টর মহম্মদ রফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, নদীপথে পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহণের জন্য ১০০০ ব্যাগ সিমেন্ট পাঠানো হচ্ছে। পরিবহণ সংস্থাকে ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পণ্য পরিবহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে”।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নদীপথে পণ্য পরিবহণের জন্য ১৯৭২ সালে প্রটোকলে সই হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে এর মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ানো হবে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর চেষ্টা হবে। গত এক বছরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সেই সব প্রোটকল রুট মারফত প্রায় সাড়ে তিন মিলিয়ন মেট্রিক টন পণ্য পরিবহণ করা হয়েছে। এ বছর মে মাসে সেই প্রটোকল রুটে নতুন সংযোজন হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, দাউদকান্দি ও সোনামুড়ার মধ্যে ৯৩ কিলোমিটার নদীপথের যে নতুন রুট অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে এবং যার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে, তাতে দু’দেশেরই পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিরও সুবিধা হবে।