
বীরভূম: মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা নিয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন পৌষমেলা কখনই বন্ধ করতে চান না তাঁরা। বরঞ্চ ‘খোলা মন নিয়ে’ এবং ‘পর্যাপ্ত অর্থ সাহায্য’ নিয়ে পৌষমেলা করার আহ্বান জানালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এদিন পৌষমেলা নিয়ে বৈঠক শেষে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার জানান, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যাঁরা আবেগকে বাস্তবায়িত করতে চান কার্যাবলীর মাধ্যমে, তাঁদের সাহায্যে পৌষ মেলা তার পূর্বরূপ ফিরে পাবে।”
এদিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষ থেকে কর্মী, আধিকারিক ও অধ্যাপকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বৈঠকে পৌষমেলা সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আমন্ত্রিত সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বিশ্বভারতী পৌষমেলা আয়োজন করবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ বছরই পৌষমেলা হবে। তবে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী শর্ত দিয়েছেন পৌষমেলা সুষ্ঠভাবে আয়োজন করতে হলে অনলাইনে স্টল বিলি, নির্দিষ্ট দিনে মেলা শেষ করা, এগুলি মানতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, কর্মসমিতির বৈঠকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পৌষমেলা করতে অপারগ তাঁরা। সেই মত গত ৮ জুলাই বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব আশা মুখার্জি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে চিঠি লিখে বিষয়টি জানিয়ে দেন। এরপর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ঘরে বাইরে প্রবল চাপ শুরু হয়। দু’দিন আগেই অনলাইনে এক বক্তৃতায় রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত জানিয়ে দেন পৌষমেলা হচ্ছে ও তা কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে হবে। একই ভাবে এবিভিপি ও পৌষমেলার পক্ষে আওয়াজ তোলে। এদিন কার্যত তাতেই সিলমোহর দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে ‘রবীন্দ্রনাথ বহিরাগত’ ইস্যুতেও সুর নরম করল বিশ্বভারতী। এদিন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর দাবি উপাচার্যের বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে এদিন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘এই বক্তব্যের জন্য অনেকে দুঃখ পেয়েছেন তার জন্য আমরা দুঃখিত ও মর্মাহত।’’
পাশাপাশি পৌষমেলার মাঠ ঘেরার ব্যাপারে সুস্পষ্ট মত প্রকাশ করেছে বিশ্বভারতী। পরিবেশ আদালতে নির্দেশ মতোই কর্তৃপক্ষ মেলার মাঠ ঘিরতে বাধ্য বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তবে তা যে নান্দনিক ভাবে হবে, তাও স্পষ্ট করা হয়েছে।বিশ্বভারতীর জানিয়েছে, ‘‘শান্তিনিকেতনের নিরাপত্তা যত খানি গুরুত্বপূর্ণ ততখানি এখানকার নান্দনিক সৌন্দর্য। এই দিকগুলো মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি। একই সঙ্গে জমি হাঙরদের কাছ থেকে বিশ্বভারতী রক্ষার জন্য কাজ করছি।’’