পাবজি-সহ ১১৮ অ্যাপ নিষিদ্ধ, ভারতের সিদ্ধান্তের কড়া বিরোধিতায় চিন

প্রতিনিধি :বৃহস্পতিবার পাবজি-সহ ১১৮টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ভারত। কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক জানায়, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারায় ওই অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করা হল। কারণ তারা এমন কিছু কাজে লিপ্ত হয়েছে যাতে ভারতের সার্বভৌমত্ব, সুরক্ষা ও প্রশাসন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতের এই সিদ্ধান্তের কড়া বিরোধিতা করল চিন। এর ফলে চিনের বিনিয়োগকারীদের অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই চিনের বাণিজ্যমন্ত্রকের তরফে ভারতকে নিজেদের ভুল শোধরানোর কথা বলা হয়েছে।

চিনের বাণিজ্যমন্ত্রকের মুখপাত্র জাও ফেং জানিয়েছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে চিনকে। কারণ, এই অ্যাপগুলির মধ্যে অনেক অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কম নয়। ফলে সেইসব অ্যাপে বিনিয়োগের পরিমাণও বেশি। কোনও রকমের আলোচনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এটা তাদের বড় ভুল। এই ভুল শুধরে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে চিন

এই অ্যাপগুলির মধ্যে গেমিং অ্যাপ পাবজির ডাউনলোডের দিকে এক নম্বরে রয়েছে ভারত। প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি ভারতীয় এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন যা গোটা পৃথিবীতে ব্যবহারকারীর ২৪ শতাংশ। এর আগে টিকটক-সহ ৫৯টি অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল ভারত। অর্থাৎ জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ১৭৭টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র। টেনসেন্ট, আলিবাবার মতো বড় কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে এইসব অ্যাপে। তাই এর একটা বড় প্রভাব যে চিনের অর্থনীতিতে পড়বে তা বলাই বাহুল্য। আর সেজন্যই ভারতের এই সিদ্ধান্তের এভাবে বিরোধিতা করা হচ্ছে বেজিংয়ের তরফে।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে বলা হয়, নানা সূত্রে থেকে জানা গিয়েছে, অ্যানড্রয়েড ও আইওএস প্ল্যাটফর্মে এমন কয়েকটি মোবাইল অ্যাপ পাওয়া যায় যেগুলি গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে। বেআইনিভাবে সেই তথ্য পাচার করে বিদেশে। ভারতের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন কোনও শক্তির কাছে সেই তথ্য পৌঁছায়। এর ফলে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। তথ্য চুরির বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।

গত শনিবার রাত থেকে প্যাঙ্গং হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে চিনের বাহিনী। তবে ভারতীয় সেনার তৎপরতায় তা ব্যর্থ হয়। এরপরে দু’পক্ষই আবার সীমান্তের কাছে তাদের যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, রীতিমতো আঁটঘাট বেঁধেই দক্ষিণ প্যাঙ্গং রেঞ্জে জমি দখলের চেষ্টা চালিয়েছিল চিন। তাই আগে থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে সীমান্তের কাছে যুদ্ধবিমান উড়িয়েছিল তারা। অন্যদিকে, প্যাঙ্গং হ্রদের কাছে চিনের পঞ্চম প্রজন্মের জে-২০ ফাইটার জেটকেও ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। সেনার দাবি, লাল ফৌজের এই গতিবিধি আগে থেকে আঁচ করে ফেলার কারণেই তাদের এলাকা দখলের চেষ্টা রুখে দেওয়া গিয়েছিল।

সীমান্তে এই সংঘাতের মধ্যেই চিনের অর্থনীতিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাচ্ছে কেন্দ্র। শুধু তাই নয়, ভারতের দেখাদেখি আমেরিকার মতো দেশও পদক্ষেপ নিচ্ছে। ফলে দু’দিক দিয়ে চাপে পড়েছে চিন। এই পরিস্থিতিতে তাই ভারতের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা ছাড়া তাদের কাছে কোনও রাস্তা নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।