
ৰেঙ্গলওয়াজ ব্যুরো , উত্তর ২৪ পরগনা: পরিত্যক্ত একটি বাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে পাওয়া গেল কঙ্কালের টুকরো হাড়গোড়। সেগুলো মানুষের কঙ্কালের টুকরো হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। শুক্রবার সকাল থেকেই এই হাড়গোড় উদ্ধার হওয়ার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় ওই এলাকায়।
শুক্রবার ১৮ই সেপ্টেম্বর বারুইপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের নর্থ কেবিন রোড অঞ্চলে একটি বাড়ি থেকে পাওয়া যায় বেশ কিছু কঙ্কালের হাড়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নর্থ কেবিন রোডের এই তিনতলা বাড়িটিতে বর্তমানে কেউ থাকেন না। বাড়িটি দীর্ঘ চার বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় দেখে মানুষের কঙ্কালের টুকরো বলেই প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। কিন্তু একটি জনমানবহীন বাড়িতে কেন ছড়িয়ে রয়েছে নরকঙ্কালের টুকরো তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ১৮ তারিখ শুক্রবার সকালে এলাকার ছেলেছোকরারা রাস্তার উপর ক্রিকেট খেলায় মত্ত ছিল। খেলার মধ্যেই ব্যাটের ধাক্কা লেগে একটি ক্রিকেট বল ওই পরিত্যক্ত বাড়িটির মধ্যে ঢুকে যায়। বলটি নিয়ে আসার জন্য বলের পিছু পিছু কয়েকজন ছেলেও ওই পরিত্যক্ত বাড়ির ভিতর ঢোকে। চৌহদ্দিতে ঢুকে তারা দেখতে পায় বাড়ির দরজা হাট করে খোলা রয়েছে। ঘরের ভিতরে জিনিসপত্র সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। আলমারির পাল্লাও খোলা। মেঝেতে তারই আশেপাশে পড়ে রয়েছে কিছু হাড়গোড়ের টুকরো। সম্ভবত কেউ না থাকার সুযোগে ওই পরিত্যক্ত বাড়িটিতে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে কিছু দুষ্কৃতীরা, এমনটাই আশঙ্কা করছেন এলাকার লোকজন।
কঙ্কালের টুকরো পাওয়ার কথা জানাজানি হতে সময় লাগেনি। ছেলেদের মুখে খবর পেয়ে নিজেদের উদ্যোগে স্থানীয় বারুইপুর থানায় খবর পাঠায় এলাকার লোকজন। কালবিলম্ব না করে ততৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে আসে বারুইপুর থানার পুলিশ।
পুলিশসূত্রে জানা গেছে, ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে অঙ্গনমোহন মন্ডল নামে এক ব্যক্তি বসবাস করতেন। তিনি ব্যাঙ্কে কর্মরত ছিলেন। যদিও গত প্রায় বছর চারেক আগে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান তিনি। সেই থেকেই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।পরিত্যক্ত বাড়িটিতে কেউ না থাকার সুযোগে কিছু দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তাদেরই কোনও দল বাড়িতে অবাধে লুটপাট চালিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় মানুষজন থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন।
তবে দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত বাড়িতে এভাবে কঙ্কালের হাড় উদ্ধার হওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পরিত্যক্ত বাড়িতে কঙ্কালের হাড় এল কীভাবে, এ প্রশ্ন ভাবিয়ে তুলেছে পুলিশ অফিসারদেরও। হাড়গুলি মানুষের কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরই সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকেরা। প্রশ্ন অনেক, আপাতত উত্তর মিলছে না। সবদিক বুঝেশুনে তদন্ত শুরু করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ।