
জলপাইগুড়ি: ৭৪ বছরে ফের একবার বিয়ের পিড়িতে বসলেন শুদ্রু রায়। উলুধ্বনি আর ব্যান্ডের বাজনায় জমজমাট হল ময়নাগুড়ির চারের বাড়ি গ্রাম।
ময়নাগুড়ি ব্লকের হেলাপাকুড়ি এলাকার চারের বাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শুদ্রু রায়। তিন মেয়ের বাবা তিনি। মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর স্ত্রীকে নিয়ে কাটত দিন। কিন্তু বছর দশেক আগে গত হন তাঁর স্ত্রী। এরপর থেকে নিজের জমিতে চাষ করা থেকে শুরু করে, বাড়ি পরিষ্কার, রান্না করে খাওয়া সবকিছুই করতেন একা একা। দীর্ঘদিন এভাবে থাকার ফলে মানসিক অবসাদ গ্রাস করছিল তাঁকে।
এরইমধ্যে বছর দুয়েক আগে হেলাপাকুড়ি গ্রামের বাজারে বাজার করতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় পাশের গ্রামের বাসিন্দা বছর ৪২ এর বুধেবালা রায়ের সঙ্গে। বুধেবালার বিয়ে হয়েছিল মাত্র ১৭ বছর বয়সে। বছর খানেকের মাথায় তাঁর স্বামী মারা যান। তারপর থেকে বুধেবালাও নিঃসঙ্গ। থাকতেন দিদির বাড়িতে।
এই নিঃসঙ্গতাই ধীরে ধীরে দুজনকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে। বুধেবালাকে নিয়ে আরও একবার ঘর বাঁধবার ইচ্ছে হয় শুদ্রু রায়ের। কিন্তু লোকলজ্জায় দু’বছর ধরে মনের ইচ্ছে মনেই চেপে রাখেন। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে সম্প্রতি শুদ্রু রায় তার প্রতিবেশী উমেশ রায়কে মনের কথা খুলে বলেন। আর সেই কথা জানার পরেই উমেশবাবু উদ্যোগী হয়ে প্রথমে বুধেবালার পরিবারে সঙ্গে দেখা করেন। বলা ভাল শুদ্রু রায়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান তিনি।
বুধেবালার পরিবারের লোকজন রাজি হওয়ায় ঠিক হয়ে যায় বিয়ে। বুধবার রাতে হিন্দু শাস্ত্র মতে পুরোহিত ডেকে ব্যান্ড বাজিয়ে মহা ধূমধামের সাথে বুধেবালাকে বিয়ে করলেন শুদ্রুবাবু। বিয়ে শেষে গ্রামবাসীরা সবাই মিলে মহাভোজ খেয়ে যে যার বাড়ি ফিরলেন।
পড়শিরা জানিয়েছেন বাবার বিয়েতে আপত্তি জানায় শুদ্রুবাবুর তিন মেয়েই। তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি তাঁরা।