নানুরে হিংসা চলছেই, কাকাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলল ভাইপো! জমির আগাছা নিয়ে বচসার মর্মান্তিক পরিণতি

বীরভূমের নানুর আছে নানুরেই। খুন ও সন্ত্রাসের ধারা সেখানে অব্যাহত। এবার কাকাকে খুনের অভিযোগ উঠল ভাইপো ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ভাইপোকেও গুরুতর জখম অবস্থায় বোলপুর সিয়ান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম নূর মহম্মদ। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর ভাইপো গফ্ফর শেখ কাকাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। অভিযুক্ত গফ্ফর বীরভূমের নানুর থানার পূসলা নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, জমিতে আগাছা কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।

অভিযোগ, কাকাকে মাঠের ধারে বেধড়ক মারধর করা হয় লাঠি দিয়ে। পাল্টা ভাইপোও মার খান। কাকাকে সিয়ান মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় ভাইপো ও আরও এক জন আহত হয়েছেন। তাঁরাও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

চলতি মাসের গোড়ার দিকেই এই নানুরেই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বোমাবাজির জেরে পুড়ে যায় ওই কর্মীর পাশের বাড়ি। এবার ফের ঘটে গেল পারিবারিক হিংসা।

এক মাস আগেই নানুরে পালিত হয়েছে শহিদ দিবস। ২০০০ সালে ২৭ জুলাই বীরভূমের নানুর থানার সুচপুর গ্রামে ১১ জন তৃণমূল কর্মীকে নৃশংস ভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল তৎকালীন বাম সরকারের সিপিআইএমের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তার পর থেকে ২৭ জুলাই প্রত্যেক বছর এই দিনটি উদযাপন করে তৃণমূল কংগ্রেস।

নানুর গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন শেখ নিজাম, রসুল বক্স, সফিক সেখ-সহ ১১ জন তৃণমূল কর্মী। তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি থেকে ছুটে এসেছিলেন নানুরের সূচপুরে। নিহত ১১ জন তৃণমূলকর্মীর দেহ সৎকার করতেও বাধা দেওয়া হয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই ১১ জনের সৎকার করিয়েছিলেন। ঘোষণা করেছিলেন, ১১ জন নিহত তৃণমূল কর্মীর প্রতিটি পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে এবং নিহতরা ন্যায়বিচার পাবে।

তার পরে দীর্ঘদিন ধরে বীরভূমের সিউড়ি জেলা আদালতে এই মামলা চলেছে। দোষীদের সাজাও হয়েছে। চাকরি পেয়েছে নিহত ১১জন তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সদস্যরা। নানুরের বাসাপাড়ায় নিহত ১১ জন তৃণমূল কর্মীর নামে স্থায়ী শহিদ বেদীও নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু সে সব কিছুর পরেও নানা ছুতোয় রাজনৈতিক সংঘর্ষ লেগেই থাকে। হিংসার আর এক নাম যেন নানুর।