কল্যাণ দত্ত :- বর্ধমান বর্ধমানের এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়ে অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী হয়েছে মেয়েটি। মেয়েটির নাম নবীনা দাস। পারিবারিক অভাব অনটন তার নিত্যদিনের সঙ্গী। এতদিন চাষ আবাদ করেই নিজেদের সংসার চলতো। কিন্তু শত অভাব অনটনও হার মানাতে পারেনি নবীনাকে। দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করে এসেছে সে। সব শেষে সব দুঃখ কষ্ট দারিদ্রতাকে পেছনে ফেলে জীবনে আজ প্রতিষ্ঠিত নবীনা। নবীনা পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বকুলতলার বাসিন্দা। তার বাবা পেশায় একজন কৃষক, চাষাবাদ করেই কোনো রকম সংসার চলে তাদের। কিন্তু এরই মধ্যে সেই জায়গা থেকেই সমস্ত প্রতিবন্ধকতা পার করে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টার ডিগ্ৰীতে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয় নবীনা। জানা গেছে, পড়াশোনার প্রথম ধাপ জামালপুরেই হয়েছে নবীনার। প্রথমে সে পড়তো জামালপুর বালিকা বিদ্যালয়ে, তারপর সেখান থেকে জামালপুর উচ্চবিদ্যালয়ে যায় সে এবং সেখান থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় নবীনা। এরপর সে স্নাতক হয় রায়নার শ্যামসুন্দর কলেজ থেকে। সব শেষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য ভর্তি হয় বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সেখান থেকেই এই সাফল্য। সাংসারিক নানা কাজ, পারিবারিক নানা অসুবিধার মধ্যে দাঁড়িয়েও নিজের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য লড়াই করেছে নবীনা এবং সে সফল হয়েছে নিজের স্বপ্নকে পূরণ করতে। নবীনার মা বলেছেন, “ছোট থেকেই সব বিষয়ে একশোয় একশো পেয়ে এসেছে, কিন্তু পরিবার থেকে সেই সহযোগিতা করার সামর্থ্যটুকু কারো ছিল না”। নবীনা নিজে জানিয়েছে, “খুব ভালো লাগতো যখন পাড়ার সকলে মিলে আমার রেজাল্ট নিয়ে আলোচনা করত, প্রশংসা করত, এমনকি তারা বাবা-জ্যেঠুর কাছে জোর করে মিষ্টি খেতে চাইতো”। এইভাবে একজন অত্যন্ত সাধারণ ঘরের মেয়ে স্বপ্ন দেখার সাহস নিয়ে যে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে পারলো তা অন্য মেয়েদের উৎসাহিত করছে। “যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে” প্রবাদ বাক্যটি যে কতটা সঠিক তা প্রমাণ করে দেখিয়ে দিলো নবীনা। সব শেষে বলা যায় নবীন প্রজন্মের কাছে নতুন দিশার আলো জাগিয়েছে নবীনা