দমদম বিমানবন্দরে উদ্ধার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন, তদন্তে গোয়েন্দা বিভাগ

বেঙ্গল ওয়াজ  প্রতিনিধি :  দমদম বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কয়েকটি ড্রোন। সূত্রের খবর, কলকাতা এয়ারপোর্টে কার্গো বিভাগে চেকিংয়ের সময় এই ড্রোনগুলি দেখে সন্দেহ জাগে নিরাপত্তাকর্মীদের মনে। তারপর সেগুলিকে সিজ করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই ড্রোনগুলি চিনে তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণ করেছে একটি ফরাসি সংস্থা। কিন্তু কী কারণে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত এই হাইটেক ড্রোনগুলি কলকাতায় আনা হয়েছিল তা জানতে তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা বিভাগ। কলকাতা থেকে এই ড্রোনগুলি কোথায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল সেটাই জানার চেষ্টা করছেন আইবি-র তদন্তকারী আধিকারিকরা।

গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তের পর তারা জানতে পেরেছে বিদেশ থেকে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ক্ষমতাসম্পন্ন হাইটেক ড্রোনগুলি কলকাতায় আনিয়েছিল মেটিয়াবুরুজের একটি সংস্থা। তাদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের লাইসেন্স সংক্রান্ত নথিও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তাতেও সন্দেহমুক্ত হতে পারছেন না গোয়েন্দারা। সেই জন্য উদ্ধার হয় এই ড্রোনগুলির খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখতে জোরকদমে তদন্তে করছে আইবি।

সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে দমদম বিমানবন্দর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এই ড্রোনগুলি দেখে প্রথম সন্দেহ জাগে নিরাপত্তারক্ষীদের মনে। শুল্ক দফতরে চেকিংয়ের সময় প্রথম আধিকারিকদের নজরে আসে ড্রোনগুলি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বললে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চিঠি দেখানো হয় শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের। কিন্তু তাতেও সন্দেহ যায়নি অফিসারদের। সঙ্গে সঙ্গেই খবর পাঠানো হয় ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোকে। প্রাথমিক ভাবে ড্রোনগুলি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও পরে আটকানো হয়। ইতিমধ্যেই ড্রোনগুলি খতিয়ে দেখছেন আইবি কর্তারা।

জানা গিয়েছে, সাধারণ ড্রোনের তুলনায় এই ড্রোনগুলি অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। ফরাসি সংস্থার তৈরি এই ড্রোনগুলির ফাইনাল সেটিং পার্টের কাজ অর্থাৎ যন্ত্রাংশ জোড়া লাগানোর কাজ হয় চিনে। সেখান থেকেই মেটিয়াবুরুজের কোনও সংস্থায় আনা হয়েছিল এই ড্রোনগুলি। জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশের কাছে নজরদারির জন্য যে সব ড্রোন রয়েছে, তা সাধারণত ২ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কাজ করে। তবে দমদম বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হওয়া ড্রোনগুলির নজরদারির ক্ষমতা এইসব ড্রোনের প্রায় দ্বিগুণ। আর তাতেই সন্দেহ আরও বাড়ছে।

এছাড়াও আইবি কর্তারা জানিয়েছেন, যেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চিঠি রয়েছে সেখানে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের চিঠিও থাকা দরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে চিঠিটি জাল কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। গোটা বিষয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পাশাপাশি শুল্ক দফতর, আইবি, অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক এবং দমদম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সকলের নজরেই আনা হয়েছে। খতিয়ে তদন্ত করে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করছে সব বিভাগ।