চুরি করা ৪৬ হাজার টাকা দামের ফোন ব্যবহার করতে না পেরে মালিককে ফিরিয়ে দিল চোর

ফোনের মালিক জানান, বিদ্যেবুদ্ধি কম থাকাতেই কীভাবে দামি ফোন ব্যবহার করবে, বুঝে উঠতে পারেনি ওই ‌যুবক। তারপরেই ফোন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত।

, পূর্ব বর্ধমান: দামি মোবাইল ফোন চুরি করে তা ব্যবহার করতে না পেরে মালিককে ফেরত দিয়ে দিল চোর। আর তাই নিয়েই এখন তুমুল চর্চা চলছে জামালপুর জুড়ে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ জামালপুর থানা মোড়ের একটি মিষ্টির দোকানে মিষ্টি কিনতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা শুভাশিস ভট্টাচার্য। টাকা দেওয়ার সময়ে তিনি বুক পকেটে রাখা ফোনটি বের করে মিষ্টির দোকানের শোকেসের উপরে রাখেন। এরপর টাকা মিটিয়ে ভুল করে ফোনটি ফেলে রেখেই দোকান থেকে বাড়ি চলে যান। খানিক বাদে ফোনের কথা মনে পড়তেই মিষ্টির দোকানে ছুটে যান শুভাশিসবাবু। কিন্তু সেখানে আর ফোনটি পাননি তিনি। তখন বেশ কয়েকবার নিজের ফোনে ফোন করেল। কিন্তু প্রতিবারই শোনেন ফোন বন্ধ আছে । অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও ৪৬ হাজার টাকা দামের অ্যান্ডরয়েড ফোনটি না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন শুভাশিসবাবু।

অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে জামালপুর থানার পুলিশ। মিষ্টির দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেও কাউকে সেই ভাবে সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এরমধ্যে লাগাতার নিজের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনে ফোন করে যান শুভাশিসবাবু। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎই ফোনটা বেজে ওঠে। এক যুবক জানায় ফোনটি তার কাছে আছে। এও জানায় ফোনটি কোনওভাবেই ব্যবহার করতে পারছে না সে। তাই ফোন ফেরত দিয়ে দিতে চায়। কোথায় গেলে ফোন ফেরত পাবেন, সেই ঠিকানাও জানিয়ে দেয়।

সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি থানায় জানান শুভাশিসবাবু। এরপর থানা থেকে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে রাত দশটা নাগাদ শুভাশিসবাবু ও তাঁর দাদা দেবাশিসবাবু ওই যুবকের কথা মতো শাহহুসেনপুর দেওয়ানপাড়ায় যায়। সেখানে ওই যুবক তাঁদের সঙ্গে দেখা করে  তাঁকে ফোনটি ফেরত দিয়ে দেয়। বিনিময়ে ওই যুবকের হাতে এক বাক্স মিষ্টি তুলে দিয়ে তাঁকে সৎ হওয়ার পরামর্শ দেন শুভাশিসবাবু। তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যেবুদ্ধি কম থাকাতেই কীভাবে ফোনটি ব্যবহার করবে, বুঝে উঠতে পারেনি ওই ‌যুবক। এরপরেই  আমার দামি ফোন থেকে সিমকার্ড খুলে নিয়ে অন্য ফোনে সিমকার্ডটি লাগিয়েছিল। সেখান থেকেই ফোনে কথা বলে। ও ফোন ফেরত দিয়ে দেওয়ায় আমিও আর পুলিশের হাতে ওকে তুলে দেইনি।’’