
বেঙ্গল ওয়াজ প্রতিনিধি : ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে আঁতাতেই যে গরু পাচার হচ্ছিল সেই তথ্য সামনে এসেছে । প্রশাসন থেকে রাজনীতির অলিন্দে সে কথা কারো কাছে অজানা ছিলনা । কিন্তু বাংলায় একুশের ভোটের আগে সিবিআই সেই কেঁচো খোঁড়া শুরু করলো । কলকাতা মালদা ও মুর্শিদাবাদের 16 টি জায়গায় বুধবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি তল্লাশি চালিয়েছে । প্রাথমিক তদন্তে যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে বিএসএফ ও কাস্টমসের সঙ্গে আঁতাত ছিল মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ এনামুল হক, গুলাম মুস্তাফা ও আনারুল শেখ এর । তাতে আরও জানা গেছে যে তারা গরু পিছু বিএসএফের অফিসারদের 2000 টাকা করে দিতো আর কাস্টমসের লোকজনকে 500 টাকা করে ।
সিবিআই সূত্রের খবর , বিএসএফ এবং কাস্টমসের কারা জড়িত ছিল সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে । এনামুলরা কার ভরসায় এই কারবার চালাত তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।
এ দিন সিবিআই যে এফআইআর করেছে তাতে অভিযোগ করা হয়েছে বিএসএফের এক কমান্ড্যান্ট এর বিরুদ্ধে । 36 নম্বর ব্যাটেলিয়ানে অধীনে চার কোম্পানি জওয়ান মোতায়েন থাকে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে । 2015 সালের ডিসেম্বর থেকে 2017 সালের এপ্রিল পর্যন্ত কুড়ি হাজারেরও বেশি গরু আটকে ছিলো বিএসএফ । সেই সময় মালদহের 36 নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডেন্ট ছিলেন সতীশ কুমার । তাৎপর্যপূর্ণ হল গরু আটকালেও খাতা-কলমে কোন পাচারকারীকে আটক বা গ্রেপ্তারি দেখানো হয়নি । কোন গাড়ি কেউ আটক দেখানো হয়নি । এতে তদন্তকারীদের আরো সন্দেহ দানা বেঁধেছে । এফআইআর-এ বলা হয়েছে আটক যে গরু গুলিকে দেখানো হয়েছে সেই তালিকাতেও বিএসএফের তরফ থেকে কারচুপি করা হতো । বড় গরু কেউ ছোট মাপের ও ব্রীদের বলে দেখানো হত । তারপর সেগুলো নিলাম হয়ে যেত 24 ঘন্টার মধ্যে । এনামুল, আনারুল ও গুলাম মুস্তাফারা নিলামে কম দামে সেই গরু গুলোকে কিনে নিত । এই চক্রের সাথে যুক্ত কাস্টমসে অফিসাররা নিলাম মূল্যের 10% এনামুল দের কাছ থেকে নিত । সিবিআইয়ের এই এফ আই এর থেকে বলাই যায় যে কুড়ি হাজার এর বেশি গরুর জন্য বিএসএফ ও কাস্টমসের অফিসারদের পাঁচ কোটিরও বেশি ঘুষ দেওয়া হয়েছিল ।এর থেকেই অনুমান করা যায় কত বড় আর্থিক লেনদেন চলত এই পাচার চক্রে । সূত্রের খবর থেকে আরও জানা যাচ্ছে যে, সিবিআই খতিয়ে দেখতে চাইছে আর কারা কারা এনামুলদের সঙ্গে এই পাচার চক্রে যুক্ত । স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের একাংশের মদতে এই পাচার চক্র চলত বলে মনে করছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা । তারা আশা করছেন , এনামুল , আনারুল ও বিএসএফ এবং কাস্টমসের অফিসারদের জেরা করে গোটা পাচার চক্রের ইতিবৃত্ত জানা যাবে ।