
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত কাল, সোমবার দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলির প্রশাসনকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারের সূচিতে ছিল পাঁচ জেলা। এদিন সড়ক যোজনার কাজ নিয়ে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়ার কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র অসন্তোষের মুখে পড়তে হল আমলাদের।
এদিন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বলেন, “বাংলার সড়ক যোজনার কাজ শেষ হল না কেন ? পেমেন্ট যারা বাকি রেখেছে তাদের ব্ল্যাকলিস্টেড করো। নিজেদের নামে এইসব শুনতে লজ্জা করছে না !” অনেক জায়গায় অভিযোগ ছিল, সরকারি খাত থেকে টাকা পয়সা ঠিক মতো ঠিকা সংস্থা না পাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গেই একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মহামারী পরিস্থিতিতে অন্য কাজ শিকেয় ওঠানো যাবে না বলে স্পষ্ট বলে দেন মমতা। আমলাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্যানডেমিক দেখিয়ে যদি আমরা অন্য কাজগুলো বন্ধ করে রাখি তা হয় ! আমরা তাহলে জামা কাপড় কচবো না, স্নান করবো না, শুধু ঘুমিয়ে থাকব ! এটা হতে পারে !” পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী আমলাদের বোঝাতে চেয়েছেন, স্নান করা, জামা কাপড় কাচা যেমন স্বাভাবিক কাজ তেমন সড়ক যোজনার সরকারি প্রকল্প রূপায়নের কাজকেও স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখতে হবে। এতে কোনও ঢিলেঢালা ভাব দেখানো চলবে না।
অনেকের মতে, বর্ষার কারণে বহু জায়গায় রাস্তাঘাটের বেহাল দশা প্রকট হয়েছে। এনিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে। গত সোমবার থেকেই হুগলির বাসুবাটী এলাকা থেকে সিঙ্গুর স্টেশন পর্যন্ত ট্রেকার রুটের চালকরা যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, যতদিন না রাস্তা সংস্কার হচ্ছে ততদিন তাঁরা গাড়ি চালাবেন না। খণ্ড খণ্ড এই সমস্ত খবরই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রয়েছে। তাই হয়তো এদিন রাগত ভঙ্গিতেই আমলাদের ধমক দেন মমতা।
জেলা ধরে এদিন পরিসংখ্যান দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাঁকুড়ায় টার্গেট ছিল ১৫০ কিলোমিটার। কাজ হয়েছে মাত্র ৩৫.৪২৩ কিলোমিটার। বীরভূমে টার্গেট ছিল ৭৫ কিলোমিটার। কাজ হয়েছে ৯ কিলোমিটার। পুরুলিয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫০ কিলোমিটার। জঙ্গলমহলের এই জেলায় কাজ হয়েছে মাত্র ২৩ কিলোমিটার। দুই বর্ধমানেও লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেক দূরে রয়েছে বাস্তবায়ন।
প্রসঙ্গত প্রতিবছরই পুজোর আগে সড়ক যোজনার কাজে বাড়তি গুরুত্ব দেয় রাজ্য সরকার। তা ছাড়া এবার আবার ভোটের আগের বছর। তাই ১০০ দিনের কাজ, সেচের কাজ-সহ একাধিক প্রকল্পের মতোই এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের অন্যতম কারণ ছিল সড়ক যোজনা।