‘কাজ না হলে ভোট নয়’, অনুব্রতর মুখের উপর স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন দলের মহিলা কর্মীরা মুখে মুখে জবাব শুনে অভ্যস্থ নন বীরভূমের বেতাজ বাদশা। তবে এদিন কিন্তু এমন ঘটনার পরেও মেজাজ হারাননি। বরং দলের অঞ্চল সভাপতিকে ডেকে ব্যাপারটা জিজ্ঞাসা করেন। সত্যাসত্য জেনে সমস্ত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন দলের মহিলা কর্মীদের।

ৰেঙ্গলওয়াজ ব্যুরো , বীরভূম: ফের নিজের গড়ে প্রকাশ্য সভায় চাপে পড়লেন অনুব্রত মণ্ডল। দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা সভাপতির উপস্থিতিতেই দলের মহিলা কর্মীরা জানিয়ে দিলেন, কাজ না হলে ভোট নয়।
বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জেলাজুড়ে কর্মিসভা শুরু করে দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রতিদিনই একাধিক সভা করছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। শুক্রবার সিউড়ি ১ ব্লকের আলুন্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাকুরিয়া গ্রামে তিনি সভা করেন। সেখানে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে সামনে রেখেই দলের মহিলা কর্মীদের জিজ্ঞেস করেন এলাকার উন্নয়নের গতি প্রকৃতি নিয়ে। তখনই ফুঁসে ওঠেন তাঁরা। সপাটে উত্তর দেন, ‘‘কাজ না হলে ভোট দেব না।’’
অনুব্রত জানতে চান জল পাচ্ছেন কি না?
তাঁরা বলেন, ‘‘কল আছে। তবে জল পাই না।’’
এরপর অনুব্রত প্রশ্ন করেন, আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি?
উত্তর আসে, ‘‘অনেকে পেয়েছেন। তবে বেশিরভাগই পাননি।’’
মুখে মুখে জবাব শুনে অভ্যস্থ নন বীরভূমের বেতাজ বাদশা। তবে এদিন কিন্তু এমন ঘটনার পরেও মেজাজ হারাননি। বরং দলের অঞ্চল সভাপতিকে ডেকে ব্যাপারটা জিজ্ঞাসা করেন। সত্যাসত্য জেনে সমস্ত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন দলের মহিলা কর্মীদের।
এর আগে সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাজিগ্রামের বুথ সভাপতি গণেশ রায় অনুব্রত মণ্ডলের কাছে রাস্তা সারাইয়ের দাবি তোলেন। তাঁর দাবি, বেহাল রাস্তার জন্যই লোকসভা নির্বাচনে ওই গ্রামের দুটি বুথ থেকে প্রায় তিনশোর কাছাকাছি ভোটে বিজেপি লিড পায়। সামনের বিধানসভা নির্বাচনে যাতে ওই ফলাফল এর পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য গ্রামের মূল রাস্তা অর্থাৎ মাঝিগ্রাম থেকে হাতোড়া পর্যন্ত বেহাল রাস্তাটি পাকা করে দেওয়ার দাবি করেন তিনি। আর এই দাবিকে ঘিরেই তেতে ওঠে সভা।
প্রকাশ্য সভায় তিনি বলেছিলেন ‘‘বাম আমলে রাস্তায় সাইকেলটা চলতো, এখন আর সেটাও চলে না।’’ আর বুথ সভাপতির মুখে এমন কথা শুনে মেজাজ হারালেন অনুব্রত মণ্ডল। ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই বুথ সভাপতিকে পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়ে দিলেন তিনি। তারপরেই তুমুল বিশৃঙ্খলায় কর্মীসভা প্রায় শিকেয় ওঠে। অনেক কষ্টে ড্যামেজ কন্ট্রোল করলেন জেলা পরিষদের মেন্টর তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ।
এ বার কিন্তু আর সে পথে হাঁটেননি অনুব্রত। বরং মেজাজে লাগাম টেনে নিজেই ড্যামেজ কন্ট্রেল করলেন।