করোনার আশঙ্কার পড়শির ফ্ল্যাটে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিলেন যুবক! শহরের অমানবিক ছবি

প্রতিনিধি : চরম অমানবিকতার সাক্ষী হল শহর কলকাতা। এবার করোনা আক্রান্ত পরিবারের ফ্ল্যাটের বাইরে থেকে চুপিসারে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই আবাসনেরই অন্য বাসিন্দার বিরুদ্ধে! আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ গিয়ে তালামুক্ত করেন তাঁদের। কেষ্টপুরের আবাসনের এই ঘটনায় আরও একবার প্রশ্ন উঠল, তাহলে কি করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে রোগীর সঙ্গেই লড়াই করে ফেলছে সাধারণ মানুষ!

পুলিশ জানিয়েছে, কেষ্টপুর ঘোষপাড়া এলাকার ওই আবাসনের ছ’তলার এক ফ্ল্যাটের বাসিন্দার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে কয়েক দিন আগে। তাঁকে বাগুইআটির এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওই পরিবারের বাকি সদস্যেরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। গতকাল, বৃহস্পতিবার রিপোর্টে দেখা যায়, আক্রান্ত মহিলার শাশুড়িও করোনা পজিটিভ। তবে তাঁর তেমন উপসর্গ না থাকায় তাঁকে হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

কিন্তু এই খবর জানাজানি হতেই প্রতিবেশীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। কিন্তু দীপ সেনগুপ্ত নামের এক ব্যক্তি সব সীমা ছাড়িয়ে যান। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার দীপ সংক্রমণের আশঙ্কায় চুপিচুপি তালা দিয়ে দেন আক্রান্ত পরিবারের ফ্ল্যাটে! আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দীপ সেনগুপ্ত মাস্ক, গ্লাভস, ফেসশিল্ড পরে মাঝরাতে চুপিসারে উপরে উঠে ছ’তলার ওই ফ্ল্যাটে দরজার বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিচ্ছেন।

আজ সকালে দরজা খুলতে গিয়ে বিষয়টি টের পান গৃহকর্তা। অনেকক্ষণ চেষ্টার পরও দরজা না খোলায় তিনি বুঝতে পারেন যে বাইরে থেকে তা লক করা হয়েছে। এর পরে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তালা ভাঙে। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, কে বা কারা করল এই কাজ! তখনই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। হাতেনাতে ধরা পড়ে প্রতিবেশী দীপ সেনগুপ্তর কীর্তি। পুলিশি জেরার মুখে পড়ে দীপ স্বীকারও করে নেন যে তিনি সংক্রমণের ভয়েই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

এদিকে সকাল থেকে তালাবন্ধ থেকে বেশ সমস্যাতেই পড়েছেন ওই বাড়ির বাসিন্দা। যদিও প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি তিনি। তবে নিউটাউন থানার পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। কারণ শহরের বুকে এমন ঘটনা কখনওই কাম্য নয়।