নিজস্ব প্রতিনিধি :- জানা গিয়েছে, চামোলি হিমবাহে ফাটল ধরেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এরকম হিমবাহে ফাটল ধরার নাম ক্রিভার্স ফরমেশন। একেবারে ভূপৃষ্ঠের তলদেশ থেকে অতিরিক্ত বরফ জমতে শুরু হলে তার চাপে এমনটা হতে পারে বলে জানা যায়। এবারের শীতের মরশুমে উত্তরাখণ্ড-সহ গোটা উত্তর ভারতেই প্রচুর তুষারপাত নজরে পড়েছে, যা চামোলি হিমবাহে ফাটলের কারণে দায়ী। এছাড়াও প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে গত কয়েকদিন ধরে। হিমবাহ ফেটে গিয়ে বরফের খানিকটা উষ্ণ অংশ উপর থেকে গড়িয়ে নিচে নেমেছে, তারপর প্রবল গতিবেগ নিয়ে বড় বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। যার জেরে এই জোশীমঠের রেইনি গ্রাম এবং আশেপাশের অঞ্চল প্রায় সম্পূর্ণ ভাবে ভেসে যায়। কিন্তু এই বিপর্যয়ের পিছনে শুধু এই একটাই কারণ নয়। রয়েছে আরেকটি বিশেষ কারণ, যা প্রাকৃতিক নয় মোটেও। পরিবেশবিদ অর্ক চৌধুরীর মতে, মানুষের তৈরি সেই বিপদ। তিনি জানাচ্ছেন, সাধারণত ১৪ হাজার ফুট উপরে থাকে আন্তর্জাতিক তুষাররেখা। আর তার নিচের দিকে বরফ গলতে পারে। উপরের দিকের বরফ এতটাই কঠিন যে সাধারণত গলে নেমে আসার ক্ষমতা থাকে না। কিন্তু নিচের দিকের বরফেরও নানা স্তর থাকে। পাহাড়ি পথে গাছ কেটে, পাথর ভেঙে ঘরবাড়ি তৈরি কিংবা সমতল এলাকায় রাস্তা চওড়া করে আরও বেশি গাড়ি চলাচলে অনুমোদন দেওয়া এসবের জেরে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আর তার প্রভাব পড়ে গিয়ে সমতল থেকে অনেক উচ্চতায় থাকা বরফভূমি বা হিমবাহের উপর। বাড়তে থাকে হিমবাহের তলদেশের উষ্ণতাও। আবার বরফপাতের জেরে একাংশের তাপমাত্রা থাকে অনেকটা কম। ফলে একই তলে তাপমাত্রার এতটা ফারাক হওয়ায় হিমবাহে ফাটল ধরা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমনকী অনেকটা তাপমাত্রা বাড়তে হিমবাহকে গোড়া থেকে তুলে ফেলতে পারে। ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে এই ভয়ানক ঘটনাই ঘটেছিল। যার জেরে মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানে ভাসিয়ে নিয়েছিল পুরো এলাকার সব কিছু। পরিবেশবিদ অর্ক চৌধুরী জানাচ্ছেন, এই সময়ে যে ধারাতে বরফ রাশি নিচে নামতে থাকে, তা কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সামনে যা বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তা প্রবল তোড়ে ভেসে যায় খড়কুটোর মতো।